কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর, ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকালে পাকিস্তান সরকারের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্ট ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটি ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ষষ্ঠ পদক্ষেপ।
ভারতের ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সকে এই পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করা হয় বলে এই সময়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েই পাকিস্তান সরকারের এক্স অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্লক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সাধারণত এক্স হ্যান্ডেলে কোনো দেশের সরকার বিভিন্ন সরকারি বিবৃতি, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অবস্থান ঘোষণা করে। পাকিস্তানের সরকারি এক্স হ্যান্ডেল এতদিন ভারতে দেখা যেত। আজ বৃহস্পতিবার থেকে সেটা আর দেখা যাচ্ছে না।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির (সিসিএস) জরুরি বৈঠক। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিক্রম মিশ্রি সাংবাদিকদের সামনে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন।
ঘোষিত পাঁচটি প্রধান পদক্ষেপ:
১. পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসে তার সমর্থন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত রাখা হবে। এটি দুই দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘদিনের চুক্তি ছিল।
২. ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রধান সীমান্ত ট্রানজিট পয়েন্ট আটারি চেকপোস্ট তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
৩. যারা বৈধ নথিপত্র নিয়ে ইতোমধ্যে ভারতে এসেছেন, তাদের ১ মের মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।
৪. সার্ক ভিসার আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগে যেসব অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। যারা এই ভিসায় বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন, তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে।
৫. ভারতের মিশ্রী জানান, পাকিস্তানি দূতাবাসের সামরিক উপদেষ্টাদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে দুই দেশের দূতাবাসে কর্মী সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে আনা হবে।
এরপর আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের সরকার পাকিস্তানের সরকারি এক্স অ্যাকাউন্টটি ভারতে বন্ধ করে দিয়েছে, যা এই ঘটনার পর ষষ্ঠ ও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপগুলো ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের প্রতি মারাত্মক বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, অঞ্চলজুড়ে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত উত্তেজনা আরো বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র : আনন্দবাজার, এই সময়